বাংলাদেশ, একটি উর্বর ভূমি যা সৃষ্টি হয়েছে গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদীর পলি জমা হয়ে। একজন কৃষকের সন্তান হিসেবে ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি পলি জমাকৃত ভূমি অনেক উর্বর হয়। বাংলাদেশও ঠিক এমনই একটি উর্বর ভূমি যেখানে বিভিন্ন ফসলের ন্যায় তৈরী হয় বিশ্বমানের ক্রিকেটার। যাদের তৈরির পেছনে মুল কারিগর নাজমুল আবেদীন ফাহিম এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মতো কিছু দেশীয় কোচ। শুরু করা যাক হৃদয়, শান্ত ও মুস্তাফিজুর রহমানের মতো ক্রিকেটারদের দিয়ে যাঁরা বাংলাদেশের কোচদের কষ্টার্জিত ফসল। যাদের দিকে তাকিয়ে একসময় বাংলাদেশ বিশ্বজয়ের স্বপ্ন বুনতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁরা জাতীয় দলে আসার পরে তাদের উপর নিজের মতো করে এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যাচ্ছে বিদেশি কোচেরা ফলাফল হলো তাদের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার ধ্বংস। এরকম শতশত ক্রিকেটার আছে যাঁরা এক সময় বাংলাদেশ ক্রিকেটে উদয় হয়েছিল ভোরের সূর্যের ন্যায় কিন্তু তাঁরা আজ ফিনিক্স পাখির মতো নিজেকে তৈরীতে ব্যস্ত। সৌম্য সরকারকে একটা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ক্রিস গেইল ভাবা হতো ঠিক তেমনি আফিফ হোসাইনকে তুলনা করতো গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সাথে, আজ হার্দিক পান্ডিয়ার মতো সাইফুদ্দিনেরা বাংলাদেশ ক্রিকেটে নেই। বিগত ১০ বছরে মিরাজ, মুস্তাফিজ ছাড়া কোনো নতুন ক্রিকেটার দলে টিকে থাকতে পারেনি। কিন্তু কেন তাঁর উত্তর কে দিবে ?
এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে ফিরে যেতে হবে শেকড়ের দিকে। কোন মাটিতে এই ফসলগুলো ফলেছে এবং কারা এই ফসলগুলো ফলিয়েছে। যে হাতে কোনো মেশিন তৈরি হয় কেবল সেই হাতই জানে সেটা পরিচালনার উত্তম উপায়। হ্যাঁ, আবারও আসলো নাজমুল আবেদীন ফাহিম এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম যাদের হাতে তৈরি হয়েছে সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার এবং তামিম ইকবালের মতো দেশ সেরা ওপেনার কেবল এই দেশীয় বিশ্বকর্মারাই পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সঠিক ব্যবহার করতে। কারও মনে প্রশ্ন আসতে পারে দেশীয় কোচেরা যে সঠিক পরিচালনা করতে পারে এর প্রমাণ কি ? এর প্রমাণ বারবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এ তাঁরা দিয়েছে। বিপিএলে বিভিন্ন সময়ে বোলিং, ব্যাটিং কিংবা প্রধানকোচ হিসেবে যথাক্রমে মোহাম্মদ রফিক, হাবিবুল বাশার,খালেদ মাহমুদ সুজন, নাজমুল আবেদীন ফাহিম এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিনসহ অনেক দেশীয় কোচেরা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে গেছেন। যেখানে বিদেশি কোচেরা তেমন পাত্তাই পায়নি সেখানে তাঁরা ছিলেন অতুলনীয় তবুও দেশীয় ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোচরা অবহেলিত। এখানে প্রাধান্য পায় নিজ দেশে গুরুত্ব না পাওয়া বিদেশি কোচেরা। কোটি ক্রিকেট প্রেমিকদের দেশে সবাই চায় ক্রিকেটের সোনালী সময় ফিরে আসুক। সুন্দর সুন্দর ফুল ফোটানো মালিরাও পাক তাদের যথাযথ মর্যাদা এবং দেশীয় বিশ্বকর্মাদের হাতে গড়ে তোলা বাংলাদেশ ক্রিকেট পাক বিশ্বজয়ের সফলতা এটাই ২০ কোটি মানুষের প্রত্যাশা।
বেলাল হোসাইন বকুল
সমাজকর্ম বিভাগ (২য় বর্ষ)
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর।