জেবুন নাহার শিলা। বর্তমান পরিচয় তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। এবছরই জানুয়ারির ২৪ তারিখ টাঙ্গাইলের সখিপুর পশ্চিম কালিদাস পানাউল্লা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন।
যোগদানের পর থেকেই নানা টালবাহানায় ক্লাস ফাঁকি দিচ্ছেন তিনি। জানা যায়, এই ছাত্রলীগ নেত্রী শিলা যোগদানের পর থেকেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্কুলে আসেন না। অধিকাংশ সময়ই ইডেন কলেজের হলে থাকেন। তা ছাড়া ছাত্রলীগের কলেজ ও কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাকে প্রায়ই দেখা যায়। গত আট মাসে তিনি ক্লাস নিয়েছেন মাত্র ৫৪ দিন।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী সভায়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো চাকরিজীবী সংগঠনটির পদে বহাল থাকতে পারেন না। কিন্তু সরকারি চাকরি করার পরও জেবুন নাহার শিলা স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন। চষে বেড়াচ্ছেন রাজনীতির মাঠ। মিটিং-মিছিল কিছুই বাদ দিচ্ছেন না তিনি। নানা ছুতোয় বারবার ছুটি নিচ্ছেন শিলা। সর্বশেষ ছুটি শেষে আড়াই মাস পার হলেও এখনও স্কুলে যোগদান করেননি, এমনকি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গেও কোনো ধরনের যোগাযোগ করছেন না শিলা।
পশ্চিম কালিদাস পানাউল্লা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধীরেন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কাগজে-কলমে জেবুন নাহার শিলা এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক; কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না। চিকিৎসা ছুটি নিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বলে শুনেছি। সর্বশেষ ছুটি শেষ হওয়ার আড়াই মাস পার হলেও তিনি যোগাযোগ করছেন না।’
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হাসান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভালো বলতে পারবেন।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাফিউল ইসলাম বলেন, ‘জেবুন নাহার শিলা মেডিকেল ছুটিতে আছেন, কিন্তু যোগদানের পর থেকে মাত্র ৫৪ দিন স্কুলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রকৌশলী ফারজানা আলম বলেন, ‘এটা গুরুতর অনিয়ম, কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। তদন্তপূর্বক দ্রুতই ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী জেবুন নাহার শিলার বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।