ফরিদ আহমেদ আবির, রাজশাহী: রাজশাহীর দুর্গাপুরে ১১ বছর বয়সী বোনের বাল্যবিবাহ ঠেকাতে থানায় মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন জানে আলম জনি নামের এক ভাই। তার বোন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। বাল্যবিবাহ দেওয়া ঠিক নয়, কোনোমতেই মা-বাবাকে বোঝাতে পারেননি তিনি। পরে জানে আলমের অভিযোগের ভিত্তিতে বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দেয় থানা পুলিশ।
জানাগেছে, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বরপক্ষের বাড়ি থেকে লোকজন এসে বিয়ের আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা পাকা করবে। তাদের আপ্যায়নের পুরো প্রস্তুতিও নেওয়া শেষ। কোন উপায় নাই দেখে জনি থানায় যান। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর এলাকার চৌবাড়ীয়া মাঝিপাড়া গ্রামে।
জনি জানান, মা-বাবাকে নানাভাবে বুঝিয়েও বোনের বাল্যবিবাহের প্রস্তুতি ঠেকাতে ব্যার্থ হয়েছেন তিনি। ঘটকের সঙ্গে যোগসাজশে তাঁর বোনকে ৩২ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই নিজেই বোনের বিয়ে ঠেকাতে সকালে থানায় এসেছেন অভিযোগ দিতে।
থানায় অভিযোগ করতে আসা জনি বলেন, আমার একটাই বোন। বয়স মাত্র ১১ বছর। এবার পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করেছি। প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম নামের ঘটকের প্রলোভনে আমার মা ও বাবা ছোট্ট বোনকে একটা বয়স্ক মানুষের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তাই বাধ্য হয়ে বোনের বাল্যবিয়ে রোধে থানায় হাজির হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুরের পর আমার বোনকে নাকফুল পরাতে আসবে বরপক্ষ। বরপক্ষের লোকজনদের খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন করা হয়েছে। এত অল্প বয়সে বোনের বিয়ে দেওয়া যাবে না। আমি আমার বোনকে লেখাপড়া করাতে চাই। পরে থানায় তার এ অভিযোগে স্কুল পড়ুয়া বোনের বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দেয়াতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন দুর্গাপুর থানা পুলিশ ও ইউএনও মহোদয় এর প্রতি।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাজমুল হক জানান, বাল্য বিয়ের বিষয়ে থানায় এসে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলো নাবালিকার ভাই। পরে আমি তার বাবা-মা’কে বিয়ে না দিতে সতর্ক করেছি। তারা বিয়ে দেবেন না বলে নিশ্চিত করেছেন।