আজ (১৯ মার্চ, ২০২২) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১১ টায় চরফ্যাশন সরকারি কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, ভোলার চরফ্যাসনের এক মিধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শাশ্বতী রায় চৈতী। তার বাবা সূভাষ চন্দ্র রায় চরফ্যাশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মা মিঠু রানী সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকা। ছোটবেলা থেকেই চৈতী ছিলো অত্যন্ত মেধাবী এবং হাসিখুশিমাখা চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে।
পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ছিলো তার অগাধ বিচরণ। সে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ অর্জন করে। পরবর্তীতে বরিশাল বি.এম কলেজে গনিত বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করে এবং একই বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত ছিলো। চাকুরির পড়াশোনায়ও তার ছিলো ভালো প্রস্তুতি।
মাধ্যমিকে পড়াকালীন চৈতীর প্রেম হয় একই এলাকার মানস মজুমদার শাওনের সাথে।
দীর্ঘ ৯ বছর চলে তাদের এ প্রেমজীবন। পরবর্তীতে দুই পরিবারের মতামত অনুযায়ী ধুমধাম করে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বিবাহের পরেই চৈতীর জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার, তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দ্বারা স্বীকার হতে হয় নানান রকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের।
বৈবাহিক জীবনের প্রায় এক বছরের মাথায় গত ৪ মার্চ, ২০২২ (শুক্রবার) ভোররাতে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় চৈতীর লাশ পাওয়া যায়। চৈতীর এ মৃত্যু অতন্ত রহস্যজনক।
চৈতীর পরিবারের দাবী, “এটা আত্মহত্যা নয়, এটা ছিলো পরিকল্পিত হত্যাকান্ড”। যার পরিপ্রেক্ষিতে চৈতীর বাবা বাদী হয়ে শাশুড়ী নিয়তি রানীকে প্রথম আসামি ও শ্বশুর সমীর মজুমদার, স্বামী মানস মজুমদার শাওনসহ তিনজনকে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীদের দাবী, ” চৈতীর এই রহস্যজনক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত যেন নিশ্চিত করা হয়, সময়ের পরিক্রমায় যেন হারিয়ে না যায় চৈতী হত্যার রহস্য। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামিদের সঠিক বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। চৈতীর মতো বাংলাদেশের আর কোন মেয়েদের যেন মেনে নিতে না হয় এই নির্মম পরিহাস, বরণ করে নিতে না হয় এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু”।
এক্ষেত্রে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য ভোলা জেলার সর্বস্তরের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
যদি সুষ্ঠু তদন্ত না হয়, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।