কবি হেলাল হাফিজ লিখেছেন,
এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিয়ো৷
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো৷
ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো৷
মহাদেব সাহা লিখেছেন,
এটুকু সামান্য দাবি,চিঠি দিও,
তোমার শাড়ির মতো অক্ষরের পাড় বোনা একখানি চিঠি।
রবীন্দ্রনাথও থেমে থাকেন নি, আটান্ন বছর বয়সে অনিন্দ্য সুন্দরী কিশোরী, রাণুর প্রেমের ডাকে”সারা দেন তিনি। দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে পত্র বিনিময় হয়। রাণুকে লিখিত প্রায় দেড়শোটার মত চিঠি রবীন্দ্রনাথের। যা বেশ সরস এবং সাহিত্য পদবাচ্যপূর্ন।
যে চিঠি মানবসভ্যতার মঙ্গলদূত হিসেবে চিহ্নিত, যে চিঠি চিন্তাচর্চার জিয়নকাঠি হিসেবে বিবেচিত, সেই চিঠিই এখন আর কাউকেই লিখতে দেখা যায় না! ডাকপিয়নের ডাক আর শোনা যায় না পথে পথে। পোস্ট অফিসের সেই লালরঙা চিঠির বাক্সগুলোও এখন আর চোখে পড়েনা।
বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন যোগাযোগর অন্যতম ভরসা মোবাইল ফোন। ফেসবুক, টুইটার, মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে চিঠি হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেখানে মুহূর্তেই মনের কথা জানানো যাচ্ছে, তখন কেইবা আর সময় নিয়ে চিঠির ব্যবহার করবে।
তবে, আজ চিঠি লিখতে পারেন। আজ লাল নীল পাতায় বাহারী রঙে মনের না বলা কথা জানিয়ে রঙিন খামে চিঠি লিখতে পারেন। যার শুরুতে স্নেহময় এবং শেষে থাকবে ইতি তোমারই।