- ইফতার পার্টির নামে টাকা হাতিয়ে ভাগ-ভাটোয়ারার অভিযোগ।
- সাধারন শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে উপদেষ্টা কর্তৃক মনগড়া কমিটি গঠন।
- কমিটি মানছেনা শিক্ষার্থীরা, ফেসবুকে সমালোচনা।
ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ (সাগরকন্যা) রমজান আসলেই ছাত্রকল্যাণ কমিটি নিয়ে সরব বেশ, প্রতি রমজানে একটা ইফতার পার্টি করেই ছাত্রকল্যাণের কাজ শেষ?
দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথরিয়ার ৬৪জেলার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন। শিক্ষার্থীদের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ভিত্তিক জেলা কিংবা উপজেলার ছাত্রকল্যাণ সংগঠন থাকে৷ তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ (সাগরকন্যা) প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর পর থেকে গণতান্ত্রিক ভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটি গঠন হয়। তবে এবছর ২০২২-২৩ সেশনের কমিটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে স্টার কাবাবে বসে উপদেষ্টা মনোনীত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতি বছর ছাত্রকল্যাণের ইফতার পার্টি ছাড়া একটা মাসিক মিটিংও হয়না। অন্যসব ছাত্রকল্যাণগুলো শিক্ষার্থীদের টিউশনির ব্যবস্থা করে দেয়, গরীব শিক্ষার্থীদের নতুন-পুরাতন বই সংগ্রহ করে দেয়, বার্ষিক শিক্ষা সফরসহ এবং শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনে পাশে থাকে। কিন্তু ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ (সাগর কন্যা) অন্যান্য সংগঠনের থেকে আলাদা। রমজান আসার পূর্বমুহূর্তে তাদের কমিটি নিয়া তড়িগড়ি শুরু হয়। একটা ইফতার পার্টির পর আর খোঁজ থাকেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালীর সাবেক এক সিনিয়র অভিযোগ করেন, প্রতি বছর ইফতার পার্টির নাম করে এমপি, মন্ত্রী, শিল্পপতিসহ গণ্যমান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি করে আমন্ত্রণ করা হয় এবং তাদের থেকে বড় অংকের ডোনেশন নেওয়া হয়। যা ইফতার পার্টিতে অর্ধেকও খরচ করেনা ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নীতিনির্ধারকেরা। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি-সেক্রেটারী শুধু নমে থাকে। উপদেষ্টাদের কাঠের পুতুল তারা, উপদেষ্টারা যেভাবে নাচায় ঠিক সেভাবেই নাচে। ইফতার পার্টি শেষে টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগও করেন সেই শিক্ষার্থী।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে, চলতি বছরের গত ২৫ ফেব্রুয়ারী স্টার কাবাবে বসে এই ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের কমিটি দেন কথিত উপদেষ্টারা। যাতে রাগে ক্ষোভে ফুসে উঠেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিরাজ বলেন, এবার যে দু’জনকে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক করা হলো এদের আমরা চিনিই না।
তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, সভাপতি ভাইকে আমি চিনিনা। সাংগঠনিক ভাবে তারা অভিজ্ঞ হলে অন্ততপক্ষে ছোটোদেরকে ডাকতো, জিজ্ঞেস করতো কেমন আছি, কোথায় থাকি!
২০১৯-২০ সেশনের সাধারণ সম্পাদক মিরাজ বলেন, সভাপতি মাইনুল ইসলাম শাওন ভাই শুক্রবারে কমিটি দিবে আমাকে জানায় নাই। মেসেজে বলেছেন স্টার হোটেলে আস, অন্য এক ভাই বললো সিভি গুলো নিয়ে আস সিভি নিয়ে হোটেলে গিয়ে দেখি কমিটি দেয়া শেষ। আমি বিস্মিত, কিভাবে সম্ভব শাওন ভাই বললো সইন কর কমিটি হইয়া গেছে, আমি সাইন না দিয়ে নামাজের জন্য মসজিদে চলে যাই, নামাজ শেষে বড়দের অনুরোধে সাইন করি। সভাপতি মাইনুল ইসলাম শাওন ভাই আমাকে না জানিয়ে কমিটি দিয়ে দিবে এটা তার ঠিক হয়নি। এটা সামাজিক সংগঠন কমিটি হবে এটা সাধারন সম্পাদকের জানার অধিকার আছে। যে কাজটি করেছেন তার জন্য কেয়ামতের দিন হিসাব দিত হবে।
উল্লেখ্য, উপদেষ্টারা সম্মিলিত স্বাক্ষর গত ২৫ ফেব্রুয়ারী ঢাকা কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ (সাগরকন্যা) এর কমিটি ঘোষনা দেন। উপদেষ্টগনের নাম আলমগীর হোসেন (প্রধান উপদেষ্টা) রিয়াজ উদ্দিন রুবেল, সালেহ আহমেদ হৃদয়,জুয়েল তালুকদার, খলিলুর রহমান, ইব্রাহিম মিয়া, নেছার উদ্দীন, আনোয়ার পাশা ও আমিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে অনেক উপদেষ্টা এই জাল জালিয়াতির কমিটি দেওয়ার পক্ষে ছিলনা।
কয়েকজন শিক্ষার্থীদের ভোটের পক্ষে ছিলো এবং একজন উপদেষ্টা আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের প্রস্তাব করে। কিন্তু কিছু অসৎ উপদেষ্টাদের জন্য সেটা সম্ভব হয়নি, এমনটাই দাবি সাধারণ শিক্ষার্থী