জোবাইদা ইয়াছমিনঃ
যুগ যুগ ধরে বাংলা ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।এখনো তার কদর রয়েছে সমানতালে।
বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান থেকে শুরু কয়ে ঘরোয়া আয়োজনেও অনেকেই জামদানি পরেন। শুধু শাড়িই নয়, জামদানির সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি,ফতুয়া এমনকি ছোটদের পোশাকও এখন পাওয়া যায়।
তবে বাজারে এখন নকল জামদানির মাঝে যেন আসলটি হারাতেই বসেছে। যেহেতু সামনে আসছে ঈদুল ফিতর। এ সময় কমবেশি সবাই কেনাকাটায় ব্যস্ত আছেন। যদি কেউ জামদানির শাড়ি বা পোশাক কিনতে চান, তাহলে তার আগে অবশ্যই তা যাচাই করে নেওয়া জরুরি।
যদিও ডিজাইন দেখে আসল নকল চেনা খুব কঠিন।
আসল জামদানি শাড়ি হয় হাতে বোনা। তাই এর ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। ডিজাইনগুলো খুব মসৃণ হয়। তাঁতিরা একটি সুতোর সাহায্যেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বুনন করেন জামদানি। এই শাড়ির সুতার কোনো অংশ বেরিয়ে থাকে না।
জামদানি শাড়ির সামনের দিক ও পিছনের দিকের বুনোট কিন্তু একই রকমের হয়। আসল জামদানি শাড়িতে সুতি ও সিল্ক সুতো ব্যবহার করা হয়। সুতার কাউন্ট দিয়ে সুতোর মান বোঝা যায়।
একটি জামদানি তৈরি করতে একজন তাঁতিকে গড়ে ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। শাড়ির ডিজাইনের উপরই সব নির্ভর করে। তাই একটি জামদানি শাড়ি বুনতে সময় লাগে ১ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস। আর মেশিনে বোনা শাড়ি সপ্তাহে ৮-১০টি তৈরি করা হয়। তাই এর দামও কিন্তু অনেক কম হয়।
আসল জামদানি শাড়ির শুরুতে সাড়ে পাঁচ হাত পর্যন্ত কোনো পাড় থাকে না। অর্থাৎ শাড়ির যেটুকু অংশ কোমরে গোঁজা থাকে সেখানে কোনো পাড় নেই।
তবে মেশিনে বোনা শাড়িতে পুরোটাই পাড় থাকে। হাতে বোনা জামদানির ওজন যেমন হালকা হয় তেমনই পরেও আরামদায়ক। অন্যদিকে মেশিনে বোনা জামদানি খসখসে হয়। নাইলনের সুতা দিয়ে তৈরি হয় বলে একটু ভারিও লাগে।
আসল জামদানি শাড়ি তৈরির সময়, সুতার মান ও কাজের ধরন অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ৩ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বা তার বেশিও একটি জামদানি শাড়ির দাম হতে পারে। তাই দাম দিয়ে জামদানি কেনার আগে আসল নাকি নকল, তা দেখে শুনে ও বুঝে কিনুন।